Pages

Friday, September 27, 2013

নামাযের ব্যবহারিক গুরুত্ব

নামাযের ব্যবহারিক গুরুত্ব
 
প্রফেসর তহুর আহমদ হিলালী : একজন ব্যক্তির মুসলমান দাবিতে সে যে সত্যবাদী তার প্রমাণ হলো নামাযের জামাতে উপস্থিত হওয়া। রাসূল (সাঃ)-এর সময়ে কোন ব্যক্তি কয়েক দিন জামাতে অনুপস্থিত থাকলেই সাহাবারা (রাঃ) বলে বসতেন, সে মুনাফিক হয়ে গেছে। এই জন্য মুনাফিকরা মুসলমান হিসাবে পরিচয় দানের জন্য বাধ্য হয়ে জামাতে শরিক হতো। মুনাফিকদের সম্পর্কে সূরা আল মাউনে বলা হয়েছে, ‘তারা নামাযে অবহেলা করে, শৈথিল্য প্রদর্শন করে এবং লোক দেখানো কাজ করে'। রাসূল (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর যুগে নামায ত্যাগকারী লোকদের মুসলমান পরিচয় দানের কোন সুযোগ ছিল না। আল্লাহপাক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নামায নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ, কিন্তু কঠিন নয় তাদের জন্য যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের ভয় রাখে'-সূরা আল বাকারা। তিনি আরো বলেন, ‘জাহান্নামীদের জিজ্ঞেস করা হবে, কোন জিনিস তোমাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে এলো?-তারা বলবে, আমরা নামাযী লোকদের মধ্যে গণ্য ছিলাম না'- সূরা আল মুদ্দাস&&সর। এতে বোঝা যায়, নামায না পড়া অর্থ আখিরাতকে অবিশ্বাস এবং জাহান্নামে যাওয়ার উপযুক্ত হওয়া। হাদীসে স্পষ্ট বলা হয়েছে কাফির ও মুসলমানের মধ্যে পার্থক্যকারী বিষয় হলো নামায। হাদীসের ভাষ্য মতে নামায ত্যাগকারী ব্যক্তি মূলত মুসলমান নয় কাফের।
মুসলমান হওয়ার ক্ষেত্রে নামাযের গুরুত্ব আমরা উপলব্ধি করলাম। এত গুরুত্বের কারণ বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ)-এর জোরালো বক্তব্যই গুরুত্ব উপলব্ধির জন্য যথেষ্ট। তারপরও আমাদের আত্মপোলব্ধির জন্য নামাযের অসংখ্য ফায়দার মধ্যে ২/১টা নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। আল্লাহপাক নামাযকে জামাতের সাথেই ফরজ করেছেন। ভাষাও ব্যবহার করেছেন বহুবচনের। তোমরা নামায আদায় কর বা রুকুকারীগণের সাথে রুকু কর। আল্লাহর রাসূল (সাঃ)-এর আমলও ছিল তাই। তিনি মদীনায় হিজরত করে নিজের বাড়ীঘরের কথা চিন্তা না করে প্রথমেই একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং সেই মসজিদে সাহাবায়ে কেরাম পাঁচ ওয়াক্ত নামায রাসূল (সাঃ)-এর ইমামতিতে আদায় করেন। সেই মসজিদে একজন অন্ধ ব্যক্তিকেও জামাতে না আসার সুযোগ দেয়া হয়নি। বরং জিজ্ঞাসা করা হয়েছে-তুমি কি আযান শুনতে পাও? তিনি বলেছেন-হ্যাঁ; তখন বলা হয়েছে তাহলে তোমাকে আসতে হবে। রহমাতুল্লিল আলামিন বলেছেন, ‘আযান শুনে যারা ঘরে বসে থাকবে আমার ইচ্ছা হয় তাদের ঘরগুলো আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিই-দিই না শুধু এ কারণে যে সেখানে নারী ও শিশু রয়েছে'। হযরত আলী (রাঃ) বলেন, ‘মসজিদের প্রতিবেশীদের নামায মসজিদেই আদায় করতে হবে'। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল-মসজিদের প্রতিবেশী কারা? তিনি জবাবে বলেছিলেন যারাই আযান শুনতে পায়। এ ছাড়া সাহাবায়ে কেরাম দুনিয়ার যেখানেই ছড়িয়ে পড়েছেন সেখানেই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। মসজিদ মূলত মুসলমানদের সমাবেশস্থল, তাদের কম্যুনিটি সেন্টার, শক্তিকেন্দ্র। আল্লাহপাক চান মুসলমানরা সংঘবদ্ধ জীবন-যাপন করুক। সংঘবদ্ধতা ছাড়া শয়তানের মোকাবেলায় টিকে থাকা বা তাকে আল্লাহর জমীনে প্রতিনিধি হিসাবে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা পালন সম্ভব নয়। আযান শোনার সাথে সাথে সকল মুসলমান ছুটে আসে আল্লাহর ঘর মসজিদে। না এসে উপায় কি? কি শক্তিশালী আহবান-আল্লাহু আকবর-আল্লাহ সর্বোচ্চ-সবার বড়-তাঁর আহবানের মোকাবেলায় তাঁর কোন দাসের আহবান কি মানা যায়? নামাযের দিকে এস, কল্যাণের দিকে এস। ঐ মুহূর্তে নামাযের চেয়ে কল্যাণকর আর কোন কাজ কি থাকতে পারে? মুসলমানরা মসজিদে উপস্থিত হয়ে এক ইমামের পেছনে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। কাতার সোজা করা নামাযের একটি অন্যতম শর্ত। নামাজের এখানে বড় শিক্ষা হলো শৃক্মখলা ও আনুগত্য। মুক্তাদির দায়িত্ব হলো যথাযথভাবে ইমামকে অনুসরণ করা। মহল্লায় পাঁচজন যুবক সপ্তাহে একদিন একটি ক্লাবে উপস্থিত হলে মানুষ তাদেরকে সমীহ করে এবং বলে ওরা সংঘবদ্ধ, ওদের একজন লীডার আছে। অথচ আমরা দৈনিক পাঁচবার একত্র হই এবং লীডারের (ইমামের) আনুগত্যের মহড়া দিই। কিন্তু আমরা নিজেদের মধ্যে সেই শক্তিমত্তা অনুভব করি না। আমরা স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা পালন করি; এ থেকে কোন শিক্ষা নিই না। ইসলামের শিক্ষা হলো নামাযে যার আনুগত্য করা হবে সমাজেও তার আনুগত্য চলবে। আনুগত্যের এই প্রশিক্ষণ ছাড়াও সপ্তাহে একদিন ইমামের বক্তব্য শোনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং ইমাম সাহেব তাঁর মুক্তাদিদেরকে ভালোর দিকে উদ্বুদ্ধ করবেন এবং তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সমাজ থেকে অনাচার দূর করবেন। এটা আজ না ইমাম সাহেব উপলব্ধি করেন আর না মুক্তাদি। মানুষকে বক্তব্য শোনানোর জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করেও একত্রিত করা যায় না অথচ আল্লাহপাক কত চমৎকার একটি আযোজন করে দিলেন যেখানে মুক্তাদিদেরকে অত্যত্ম মনোযোগের সাথে ইমামের কথাগুলো শুনতে হয়। পাশে কেউ কথা বললে ভাই, চুপ কর-তাও বলা যায় না। কত ভক্তি-শ্রদ্ধা। শুধু পরিকল্পনা ও জ্ঞানের অভাবে এতবড় সুযোগ আজ মুসলমানরা কাজে লাগাতে পারছে না। ইমাম বা নেতার আনুগত্যের সীমাও আমরা নামাযের মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করতে পারি। ইমাম মানুষ, ভুল তাঁরও হতে পারে। সামান্যতেই অনাস্থা আনা কাম্য নয়। তাই শেখানো হয়েছে ইমাম সাহেব যদি সুন্নাত-মুস্তাহাব ভুল করে তা ধর্তব্যের বিষয় নয়, ওয়াজিব ভুল করলে সহু সিজদাহর মাধ্যমে ইমাম সাহেবকে শোধরায়ে নিতে হবে। কিন্তু ফরজ লংঘন করলে নামায পুনরায় আদায় করতে হবে। আমরা লক্ষ্য করি সুন্নাত-মুস্তাহাব নিয়ে আমাদের মধ্যে কত মত-পার্থক্য, দলাদলি, লড়াই-সংগ্রাম। অথচ নামাযের মত ইবাদত সুন্নাত-মুস্তাহাব ছাড়াই সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। ক্ষুদ্র দলাদলি ও মত-পার্থক্য পরিহার করে আজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এসেছে। আল্লাহতা'লার আদালতে আমাদেরকে হারাম-হালাল ও ফরজ-ওয়াজিব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের ফরজ-ওয়াজিবে ঘাটতি থাকলে সুন্নাত-মুস্তাহাব পরিপূরক হিসাবে কাজে লাগবে এবং আমাদেরকে পূর্ণতায় পৌঁছে দিবে। হালাল-হারাম ও ফরজ-ওয়াজিব সম্পর্কে আমাদের মুসলিম সমাজে সচেতনতার মারাত্মক ঘাটতি। নামাযের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সে সচেতনা আসতে পারে।
আল্লাহপাকের বাণী, ‘আমি জ্বীন ও মানুষকে কেবল আমারই গোলামী (ইবাদত) করার জন্য সৃষ্টি করেছি'। মানুষ আল্লাহপাকের সার্বক্ষণিক গোলাম-সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়-কোন একটি মুহূর্ত সে আল্লাহর গোলামীর বাইরে নয়। এ উপলব্ধি যাতে মানুষ ভুলে না যায় সেজন্যই মূলত পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়েছে। একজন মুসলমানের ঘুম ভাঙে আযানের শব্দে এবং সে তখন আর মালিকের আহবানে স্থির থাকতে পারে না। আল্লাহর ঘরে ছুটে এসে প্রমাণ করে ‘প্রভু-পরোদিগার-আমি তোমারই গোলাম, আমি তোমার ঘরে হাজির'। নানা কর্মব্যস্ততার মধ্যে সকল কাজ পরিহার করে জোহর, আছর, মাগরিব এবং শোয়ার পূর্বে এশার জামাতে হাজিরা দিতে হয়। নামায বারবার আল্লাহর গোলামীর কথা স্মরণ করে দেয় বলে নামাযকে বলা হয় জ্বিক্র। নামাযের মাধ্যমে একজন নামাযী বারবার আল্লাহপাকের নিকট এই প্রতিশ্রুতিই প্রদান করে যে, ‘আমরা কেবল তোমারই গোলামী করি এবং তোমারই নিকট সাহায্য কামনা করি'। এই প্রতিশ্রুতি দান সত্ত্বেও মসজিদ থেকে বের হয়েই একজন নামাযী আল্লাহর নাফরমানি শুরু করে দেয়। আল্লাহর বাণী, ‘সালাত সমাপনান্তে তোমরা রুজির জন্য বেরিয়ে পড় এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ কর'। আল্লাহর স্মরণের জন্য যেমন নামায আদায় করা হলো ঠিক তেমনি কর্মক্ষেত্রে আল্লাহর বিধি-বিধান পালনের মাধ্যমে তাঁকে আরো বেশি বেশি স্মরণ করতে হবে। মানুষ যাতে সর্বক্ষণ আল্লাহর স্মরণ ও আল্লাহর ভয়ে আল্লাহর আদিষ্ট কাজ সম্পাদন এবং নিষিদ্ধ কাজ পরিহার করে চলতে পারে সে জন্যই মূলত নামায ও রোযার মত বিধান আমাদের প্রতি ফরজ করা হয়েছে। নামাযের জন্য নামায নয়, আবার রোযার জন্যও রোযা নয়। আল্লাহর নিষ্ঠাবান বান্দাহ হিসাবে গড়ে তোলার জন্যই এ সব আনুষ্ঠানিকতা। ইবাদতের মর্ম উপলব্ধি না করায় আজ মুসলমানরা স্রেফ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত, তাছবীহ পাঠ ও নির্দিষ্ট মাপের পোশাক-পরিচ্ছদকেই কেবল ইবাদত মনে করছে এবং কর্মময় জীবনে আমাদের লেন-দেন, বিচার-আচার, অফিস-আদালত, চাল-চলন, আচার-ব্যবহার ইসলামসম্মত হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে মোটেই গুরুত্ব আরোপ করছে না। বরং মনে করছে কর্মময় জীবনে কিছু গুনাহ হলেও নামায-রোযার মাধ্যমে তা মাফ পেয়ে যাব। অথচ এসবই ভুল। বরং কুরআনের বক্তব্য ‘নামায নিঃসন্দেহে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে'। নামায আদায়ের পরও যদি মানুষ পরিশুদ্ধ না হয় সে নামায মূলত মুনাফিকের নামায। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘যে নামায মানুষকে অন্যায় ও দুষ্কর্ম থেকে ক্ষান্ত করে না, সে নামায আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়ে দেয়'। রোযা প্রসঙ্গেও একই কথা, ‘রোযা রেখেও যে মিথ্যা ছাড়তে পারলো না, সে রোযায় আল্লাহর কোনই প্রয়োজন নেই'। নামাযের মাধ্যমে আল্লাহকে দেয়া প্রতিশ্রুতি বারবার ভঙ্গ করে আমরা আল্লাহর নাফরমানিতে মেতে উঠেছি। অফিস-আদালতে ঘুষ, মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান, ওজনে কম, ভেজাল প্রদান, মিথ্যা কসম, ধোঁকা-প্রতারণা, মানুষের সম্মান হানি এমন কোন অপকর্ম নেই যা আজ মুসলিম নামধারীরা না করছে। এ সবই আল্লাহপাকের নাফরমানি, কবীরা গুনাহ এবং বন্দাহসুলভ আচরণের পরিপন্থি। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে সামাজিক জীবনে দুশমনি মূলত মুনাফিকদেরই কার্য। এ প্রসঙ্গে ইসলামের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট। আল্লাহর রাসূল (সাঃ) সাহাবীদেরকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমাদের মধ্যে দরিদ্র কে? সাহাবারা জবাব দিলেন যার টাকা-পয়সা নেই। তিনি বললেন, না- ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে দরিদ্র যে নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি সম্পাদন করার সাথে সাথে মানুষকে কষ্ট দেয়, তার হক নষ্ট করে-সেদিন যার প্রতি জুলুম করা হয়েছে তার পাওনা পরিশোধ করতে হবে তার অর্জিত ছাওয়াব দিয়ে এবং পূরণ না হলে মজলুমের গুনাহ তাকে দিয়ে অপমানের সাথে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে'। সমাজে যে সব কাজ নিন্দনীয় অর্থাৎ যা আমাদের সমাজটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে তার প্রত্যেকটি সম্পর্কে রাসূল (সাঃ)-এর উক্তি আমরা একটু স্মরণ করি। ঘুষের দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই জাহান্নামী; এক দিরহাম সুদ খাওয়া ছত্রিশবার জ্বিনা অপেক্ষা জঘন্য; সকল নেশার দ্রব্য অবৈধ হারাম; গীবত জ্বিনা অপেক্ষা জঘন্য; মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া শিরকের সমতুল্য বড় গুনাহ; মিথ্যা সকল পাপের মা; যার ওয়াদা-প্রতিশ্রুতির ঠিক নেই তার ধর্ম নেই; যে আমানতের খেয়ানত করে তার ঈমান নেই। এভাবে যদি আমরা উল্লেখ করি তাহলে দেখবো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ রকম সকল কাজই হারাম। নামায, রোযা আদায় না করা যেমন কবিরা গুনাহ; এ সব সামাজিক অপরাধ করাও কবিরা গুনাহ। আল্লাহর সাথে সংশ্লিষ্ট হুকুম লংঘন করলে আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে পরিত্রাণ সম্ভব, কিন্তু বান্দাহর হক নষ্ট করলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিকট থেকেও ক্ষমা মঞ্জুর করে নিতে হবে। কাজটি বড়ই কঠিন। তাই নামাযে দেয়া প্রতিশ্রুতি আমাদের ব্যবহারিক জীবনে প্রতিপালনের মাধ্যমে আমরা আল্লহর প্রিয়ভাজন বান্দাহ হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমীন।

No comments:

Post a Comment